ভাষাসৈনিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক চিন্তা সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫,মঙ্গলবার, ২০:৪২
ভাষাসৈনিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক চিন্তা
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫,মঙ্গলবার, ২০:৪২
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫,মঙ্গলবার, ২০:৪২
See more at: http://dev.dailynayadiganta.com/detail/news/1492#sthash.TOVTlMZL.dpuf
বেঙ্গল
রেজিমেন্টের দু’জনের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদন'
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান আলাদাভাবে স্বাধীন হওয়ার সময় ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দু’টি অংশে ভাগ করা হয়েছিল, যার একটি অংশ ভারত পায় এবং আরেকটি অংশ পাকিস্তান পায়। অতঃপর তাদের নাম হয় যথাক্রমে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী। সেই নতুন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে পদাতিক কোর বা পদাতিক বাহিনীতে বাঙালিদের অংশগ্রহণ ছিল না বললেই হয়। অথচ সেনাবাহিনী একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সংস্থা। তাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পদাতিক কোরে বাঙালিদের জন্য স্বতন্ত্র একটি রেজিমেন্ট স্থাপন করতে উগগ্রীব হয়ে ওঠেন কিছু সচেতন বাঙালি অফিসার। এরকম দু’জন অফিসারের মধ্যে প্রথমজন হলেন মেজর আব্দুল গণি, সচরাচর শুধু মেজর গণি বলে পরিচিত। দ্বিতীয়জন হলেন মেজর মহম্মদ তহম্মল হোসেন, সমসাময়িকগণের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন মেজর এম টি হোসেন নামে। উভয়েই মরহুম। মেজর গণিকে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রথম ইউনিট বা দলটিকে বলা হয় ‘ফার্স্ট ব্যাটালিয়ন, দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট’। সংেেপ এটাকে বলা হয় প্রথম বেঙ্গল রেজিমেন্ট বা আরো সংেেপ, ফার্স্ট বেঙ্গল। এই ব্যাটালিয়নের আনুষ্ঠানিক জন্ম ১৫ ফেব্র“য়ারি ১৯৪৮ সালে।
বর্তমানে যেটাকে ঢাকা সেনানিবাস বলা হয়, তার সবচেয়ে উত্তরের অংশকে বলা হয় কুর্মিটোলা। ঢাকা সেনানিবাসে যেই অতি উচ্চমানের বিখ্যাত গলফ কাব আছে, সেই গলফ কাবের নাম কুর্মিটোলা গলফ কাব। কুর্মিটোলা নামে ভৌগোলিক এলাকাটি এখন বাংলাদেশ বিমানবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত এবং স্বনামধন্য একটি বিমানবাহিনী ঘাঁটি বা বেইজ। ১৯৪৭-৪৮ সালে এখানে বিমানবাহিনীর স্থাপনা ছিল ন্যূনতম।
এই কুর্মিটোলাতেই প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সংগঠিত হয় ও জন্ম লাভ করে। প্রতিষ্ঠা ও সংগঠনের প্রক্রিয়া কয়েক মাস চলার পর, আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের তারিখ ঠিক হয়েছিল ১৫ ফেব্র“য়ারি ১৯৪৮। প্রধান অতিথি ছিলেন তখনকার আমলের পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর স্যার ফ্রেডারিক ব্রেবর্ন। আরো উপস্থিত ছিলেন খাজা নাজিমউদ্দিন, নূরুল আমিন, প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার অন্যান্য মন্ত্রী, ওই আমলের পূর্ব পাকিস্তানে নিয়োজিত জিওসি ব্রিগেডিয়ার আইয়ুব খান। অবশ্যই আরো সামরিক অফিসার, জুনিয়র কমিশনড অফিসারসহ, প্রথম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সবাই উপস্থিত ছিলেন।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর, চা-চক্র শেষে, বিবিধ বিষয়ে আলাপ করার সময় ব্রিগেডিয়ার আইয়ুব খান ইংরেজি ভাষায় বলেন, ‘ফ্রম নাউ অন ওয়ার্ডস বেঙ্গলি সোলজার্স উইল স্পিক ইন উর্দু অ্যান্ড নট ইন বেঙ্গলি।’ এতে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের নবনিযুক্ত উপ-অধিনায়ক মেজর এমটি হোসেন ুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করে ইংরেজি ভাষায় বলেন, ‘এক্সকিউজ মি স্যার। ইন ওয়েস্ট পাকিস্তান পাঠান সোলজার্স হ্যাভ বিন এলাউড টু স্পিক ইন পশতু। সিমিলারলি আউয়ার বেঙ্গলি সোলজার্স শুড বি অ্যালাউড টু স্পিক ইন বেঙ্গলি অ্যান্ড উর্দু।’ রাগান্বিত হয়ে ব্রিগেডিয়ার আইয়ুব খান ইংরেজিতে বলেন, ‘ননসেন্স। অ্যাবসার্ড। সিট ডাউন।’
এরূপ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় আত্মসম্মানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে, মেজর গণি যুগপৎ ুব্ধ ও আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন। তিনি ইংরেজিতে বলেন, ‘এক্সকিউজ মি স্যার। হোয়াটএভার মেজর এমটি হোসেন হ্যাজ সেইড ইজ নট কারেক্ট। উই বেঙ্গলি সোলজার্স উইল নেভার স্পিক ইন উর্দু, বাট ইন আওয়ার মাদার টাংগ বেঙ্গলি।’ মেজর গণির এরূপ শক্তিশালী বক্তব্যে, ব্রিগেডিয়ার আইয়ুব খান অধিকতর রাগান্বিত হয়ে বলেন, ‘শাটআপ। সিট ডাউন।’
কিছু দিন পরই তৎকালীন জিওসি আইয়ুব খান হুকুম জারি করেন যে, কোনো বাঙালি সৈনিক জেসিও এবং অফিসার বাংলায় কথা বলতে পারবে না। মেজর গণি ও মেজর হোসেন প্রথম হুকুম অমান্য করে এর প্রতিবাদ জানান। এর প্রতিক্রিয়ায় এই দু’জন অফিসারকেই নির্যাতন সহ্য করতে হয় এবং কিছু দিনের মধ্যেই ব্যাটালিয়ন হতে অন্যত্র বদলি করে দেয়া হয়।
ভাষার মাস ফেব্র“য়ারিতে, আমরা মেজর গণি এবং মেজর এমটি হোসেনের প্রতি
আমাদের গভীর শ্রদ্ধানিবেদন করছি। মেজর এমটি হোসেনের পরিবারের সাথে আমাদের যোগাযোগ
নেই; মেজর গণির পরিবারের সাথে
আছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মেজর গণির সম্মানিত স্ত্রী, বেঙ্গল রেজিমেন্টের বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ
ফাংশনে দাওয়াত পেতেন। মেজর গণি ইন্তেকালের সময় তার বড় ছেলে তাজুল ইসলাম গণি এবং
ছোট ছেলে খালেদ গণির বয়স ছিল যথাক্রমে ছয় বছর এবং ছয় মাস। উভয়েই বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীতে ছিলেন, যথাক্রমে
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর। জনাব তাজ, দেশ-বিখ্যাত ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের ছাত্র
হিসেবে আমার থেকে দুই বছর ছোট। মাতৃভাষার জন্য উদ্দীপ্ত হওয়া দুই সৈনিক হোসেন এবং
গণির সম্মানিত পরিবারবর্গ যেখানেই থাকুন না কেন, তাদের প্রতি অভিনন্দন। মরহুম মেজর আব্দুল গণির
জ্যেষ্ঠ সন্তান, তার পিতার জীবনী
লেখার নিমিত্তে এখন গবেষণা করছেন। ওই গবেষণা থেকেই ধার করে আমি ওপরের কথাগুলো তুলে
ধরেছি। জ্যেষ্ঠ সন্তানের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
Syed Muhammad Ibrahim is the epitome of heroism
17 February 2015, Tuesday, 20:42
When India and Pakistan became independent in 1947, the
British Indian Army was divided into two parts, one for India and the other for
Pakistan. After that they were named Indian Army and Pakistan Army
respectively. There was hardly any Bengali participation in the infantry corps
or infantry in that new Pakistan Army. But the army is a very important state
organization. So some conscious Bengali officers became eager to establish a
separate regiment for Bengalis in the infantry corps of the Pakistan Army. The
first of the two such officers was Major Abdul Ghani, commonly known simply as
Major Ghani. The second was Major Mohammad Tahammal Hossain, known to
contemporaries as Major MT Hossain. Both are deceased. Major Gani is identified
as the founding father of the East Bengal Regiment. The first unit or group of
the East Bengal Regiment is called 'First Battalion, The East Bengal Regiment'.
It was called the First Bengal Regiment or more simply, the First Bengal. The
official birth of this battalion was on 15 February 1948.
The northernmost part of what is now Dhaka Cantonment is
called Kurmitola. The most famous golf club in Dhaka Cantonment is Kurmitola
Golf Club. The geographical area called Kurmitola is now used by the Bangladesh
Air Force and is reputed to be an Air Force Base or Base. In 1947-48, the Air
Force establishment here was minimal. It was in this Kurmitola that the first
East Bengal Regiment was organized and born. After several months of
establishment and organization process, the official opening date was fixed on
15 February 1948. The Chief Guest was the then Governor of East Pakistan, Sir
Frederick Braeburn. Also present were Khwaja Nazimuddin, Nurul Amin, other
ministers of the provincial cabinet, GOC Brigadier Ayub Khan who was posted in
East Pakistan at that time. Of course more military officers, including junior
commissioned officers, all of the 1st Bengal Regiment
After the formal inauguration, at the end of the tea-chakra,
while discussing various issues Brigadier Ayub Khan said in English, 'From now
on words Bengali soldiers will speak in Urdu and not in Bengali.' The newly
appointed Deputy Commander of the 1st East Bengal Regiment, Major MT Hussain
protested and said in English, ' Excuse me sir. In West Pakistan Pathan
Soldiers Have Been Allowed To Speak In Pashto. Similarly, our Bengali Soldiers
should be allowed to speak in Bengali and Urdu.' Angry Brigadier Ayub Khan said
in English, 'Nonsense. Absurd. Sit down. ‘His self-esteem was hurt by such a
reaction, Major Gani became at once nervous and emotional. He said in English,
'Excuse me sir. Whatever Major MT Hussain has said is not correct. We Bengali
Soldiers Will Never Speak In Urdu, But In Our Mother Tongue Bengali.' Major
Gani's powerful speech, Brigadier Ayub Khan became angrier and more said,
'Shutup. Sit down.' A few days later, the then GOC Ayub Khan issued an order
that no Bengali soldiers, JCOs and officers could speak Bengali. Major Gani and
Major Hossain protested by disobeying the first order. In response, both these
officers suffered torture and were transferred from the battalion within days.
On February, the month of language, we pay our deepest
respects to Major Gani and Major MT Hussain. We are not in touch with the
family of Major MT Hussain; Major Gani is with his family. The respected wife
of Major Gani till her death, was invited to most of the important functions of
the Bengal Regiment. At the time of Major Gani's death, his elder son Tajul
Islam Gani and younger son Khaled Gani were six years and six months
respectively. Both were in Bangladesh Army, retired colonel and retired major
respectively. Mr. Taj, two years younger than me as a student of the nationally
renowned Faujdarhat Cadet College.
Congratulations to the two soldiers, Hussain and Gani's
respected family wherever they may be, who are passionate about their mother
tongue.
The eldest son of late Major Abdul Ghani, is now researching
to write a biography of his father. Borrowing from that research, I have
highlighted the above words. I am thankful for the eldest child.
Author: Major General (Retd.).